গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত
গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসে বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে। এটি বলা হয়েছে প্রত্যক্ষভাবে অথবা পরোক্ষভাবে। মানুষ মাত্রই ভুল। তবে এই ভুল থেকে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মানুষ আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে। নিজের মনের ভাব আল্লাহর
কাছে প্রকাশ করার মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়া যায়। হাদিস ও কুরানে বিশেষ পদ্ধতি ও দোয়া রয়েছে। যেটি প্রয়োগ করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি দ্রুত অর্জন করা যায় এবং নিজের গুনাহ মাফ করানো যায়। সেই দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কেই আমাদের আজকের কনটেন্ট। চলুন বিস্তারিত জানি।
পেজ সূচিপত্রঃ গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত
গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত
গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে হলে এটিকে ধাপে ধাপে জানা অত্যন্ত
জরুরি। প্রথমে জেনে নেওয়া যাক গুনাহ কেন হয়। পৃথিবীর প্রতিটি দেশে তাদের নিজস্ব
আইন রয়েছে। আর যেখানে আইন রয়েছে সেই আইন ভঙ্গ করাটাই অপরাধ। ঠিক তেমনি আল্লাহ
কর্তৃক প্রদত্ত কিছু বিধি-বিধান মনুষ্য জাতির প্রতি প্রদান করা হয়েছে। মানুষ যখন
এই বিধি-বিধান গুলো ভঙ্গ করে অথবা অবমূল্যায়ন করে তখন সে গুনাহ করেছে বলে
মনে করে। আর যখন কোন মানুষ গুনাহ করে ফেলে তখন,
তার ওপর সেই গুনাহ মাফ করার জন্য দোয়া করাটা ওয়াজিব হয়ে দাঁড়ায়। গুনাহ মাফ
করার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করতে কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ না করলেও গুনাহ
মাফ করানো যায়। তবে আল্লাহর দেওয়া কুরআনে ও নবীর দেওয়া হাদিসে বর্ণিত পদ্ধতি
সমূহ অনুসরণ করলে আল্লাহ অধিক খুশি হন। এবং সেই দোয়াটি কবুল করে নেন। কাজেই
উত্তম উপায় হচ্ছে গুনাহ মাফ এর দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিস ও কুরআনে বর্ণিত
পদ্ধতি অনুসরণ করা। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। নিম্নের গুনাহ মাফের কিছু মাধ্যম বলে দেওয়া হলোঃ
- ইস্তেগফার এর মাধ্যমে।
- ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে।
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার এর মাধ্যমে
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার হলো ক্ষমা চাওয়ার সর্বোত্তম দোয়া। নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে যে ব্যক্তি সাইয়্যেদুল
ইস্তেগফার সকালে পড়বে এবং সে যদি সেই দিনে মারা যায় তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। এবং যে ব্যক্তি রাতে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়বে এবং সে যদি সেই রাতে মারা যায় তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। ইসলামিক নিয়ম অনুসারে সাধারনত যুদ্ধের ময়দান থেকে কেউ পলায়ন করলে তাকে
মুনাফিক হিসেবে পরিগণিত করা হয়। সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার হলো এমন একটি দোয়া
কেউ যদি যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করে এবং সে যদি সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়ে তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারের বাংলা তর্জমা হলো, হে আল্লাহ তুমি আমার পালনকর্তা।
তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য বা ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ আমি তোমার দাস।
আমি আমার সাধ্যমত তোমার কাছে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি
আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে
দেওয়া তোমার অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার পাপসমূহ স্বীকৃতি দিচ্ছি।
কাজেই তুমি আমাকে ক্ষমা করো। কেননা তুমি ব্যতীত পাপ সমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই।
এই দোয়াটি নিয়মিত দিনে একবার এবং রাতে অন্তত একবার পড়ুন। আল্লাহর কাছে দুই
হাত তুলে এই দোয়া পড়ে মাফ চান।
তাওবাতুন নাসুহা অনুশীলনের মাধ্যমে
তাওবাতুন নাসুহা অর্থ পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
অর্থাৎ আপনি আল্লাহর কাছে যে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন সেটি আদৌ মন থেকে ক্ষমা
প্রার্থনা করছেন নাকি সেটি শুধুমাত্র আপনার মুখের বুলি সেটির উপর নির্ভর করছে
যে আপনার ক্ষমা চাওয়ার কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আপনি যদি লোক দেখানোর জন্য
তাওবা করে থাকেন বা ক্ষমা চান তাহলে সেটি রিয়াহ হয়ে গেল। আর লোক দেখানো ইবাদত
আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না বরং এটি শির্কের পর্যায়ে চলে
যায়। কাজেই পরিশুদ্ধ হৃদয় নিয়েই আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে।
বিশেষত ক্ষমা চাওয়ার সময়। পবিত্র কুরআনে তাওবাতুন নাসুহা শব্দটি এসেছে সূরা
তাহরীম এ। সূরা তাহরীম পবিত্র কুরআনের ৬৬ নম্বর সূরা। পবিত্র কুরআনের ৬৬
নম্বর সূরার ৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ওহে যারা ঈমান এনেছ পরিপূর্ণ
ও খাটি তাওবা করো। এই আয়াতটিতে খাঁটি তাওবা শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হলো
তাওবাতুন নাসুহা। যার অর্থ দাঁড়ায় পূর্বের গুনাহ ত্যাগ করে পরিশুদ্ধভাবে
ক্ষমা চেয়ে সেই গুনাহ পুনরায় না করার নিয়ত করা। এটি আল্লাহর নিকট অধিক
প্রিয়। ক্ষমাপ্রার্থনা করার সময় তাওবাতুন নাসুহা অবশ্যই অনুশীলন করবেন।
হাদিসে তাওবা কবুলের শর্ত
হাদীস শরীফে বিভিন্ন জায়গায় বর্ণিত হয়েছে যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাওবা করার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এবং মুমিনদের নির্দেশ
দিয়েছেন যাতে তারা বেশি বেশি তাওবা করে। কেননা যে ব্যক্তি যত বেশি তাওবা করবে
তার গুনাহ তত বেশি মাফ হবে এর পরিবর্তে তার আমলনামায় নেকি জড়ো হবে। হাদীস
শরীফে তাওবা কবুলের তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। গুনাহ মাফের দোয়া ও
ফজিলতসে শর্ত সমূহ হলোঃ
- যে গুণাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হচ্ছে সেই গুনাহ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা।
- নিজের মনকে গভীর অনুশোচনা মগ্ন করা।
- যে গুনার কারণে ক্ষমা চাওয়া হচ্ছে সেই গুনাহ পুনরায় না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা।
এই পদ্ধতিটি অনুশীলনের মাধ্যমে গুনাহ কবুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে কোন
গুনাহ যদি আল্লাহর কোন বান্দার সাথে সম্পর্কিত হয়। অর্থাৎ কারো যদি হক আদায়
না করা হয় অথবা হক নষ্ট করা হয়। তাহলে যে ব্যক্তির হক নষ্ট করা হয়েছে বা যার
হক আদায় করা হয়নি তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। এরপর আল্লাহর নিকট
পরিশুদ্ধ হৃদয় নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।
গুনাহ মাফ সম্পর্কে হাদিস
হাদিস অর্থ হলো মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বাণী। অর্থাৎ
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার জীবনে যে সমস্ত বার্তা এবং কথা বলে গেছেন
সেগুলো এবং তিনি তার জীবনে যে সমস্ত কার্যাবলী করেছেন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত
বর্ণনাই হলো হাদিস। আর হাদিসে কুরসি হলো আল্লাহ তায়ালার বাণী যেটি মহানবী
সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে বলেছেন এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তাঁর
সাহাবীদের জানিয়েছেন। বিভিন্ন হাদিস শরীফে গুনাহ মাফ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস
রয়েছে। এমন পাঁচটি হাদিস নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- ওহে মানুষ আল্লাহর কাছে তাওবা করো। তার নিকট ক্ষমা চাও। আমি দিনে সত্তর বারের বেশি তওবা করি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৭০২)
- হাদীসে কুরসি তে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি তোমার গুনাহ আকাশ পর্যন্ত পৌছায় তবুও তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। আমি তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিব। (তিরমিজি, ৩৫৪০)
- গুনাহ থেকে যে তওবা করে সে এমন যেন সে কখনোই গুনাহ করেনি। (ইবনে মাজা, ৪২৫০)
- আরাফার দিনে রোজা রাখলে এক বছর আগের ও এক বছর পরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম, ১১৬২)
- যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানে রোজা রাখে তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারী, ৩৮)
উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে প্রত্যেক মুমিন মানুষের জন্যই ক্ষমা
চাওয়া জরুরী। এবং সে যদি ক্ষমা চায় তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তার দোয়া কবুল করবেন।
এর পরিবর্তে প্রতিটি পাপের বিনিময়ে তাকে দশটি করে নেকি দেওয়া হবে। তাই আমাদের
প্রত্যেকের উচিত বেশি বেশি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
গুনাহ মাফ এর ফজিলত
আল্লাহ তায়ালার একটি গুণবাচক নাম হল তিনি আল গাফফার। অর্থাৎ তিনি গুনাহ মাফ করতে
পছন্দ করেন। কথিত আছে বান্দা গুনাহ করতে ভালোবাসে এবং আল্লাহ গুনাহ মাফ করতে
ভালোবাসেন। যদি কোন বান্দা আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করে তাহলে প্রথমত সে
আল্লাহর নিকট মর্যাদাবান হয়। এর পাশাপাশি তার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। যে
ব্যক্তি নিয়মিত ক্ষমাপ্রার্থনা করে আল্লাহ তায়ালা তার অন্যান্য দোয়া সমূহও কবুল
করে নেন। প্রতিটি গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং সেই গুনাহর পরিবর্তে তার
আমলনামায় সওয়াব লিখে দেওয়া হয়।
অর্থাৎ আপনি করলেন খারাপ কাজ কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সেটি ভালো কাজের
রূপান্তরিত হয়ে আপনার আমল নামায় সওয়াবে পরিণত হলো। এমনকি আল্লাহ তায়ালা
হাদিসে কুরসিতে বলেন যদি কোন মানুষ আকাশ পরিমাণ গুনাহ করে এবং সেই গুনাহর মধ্যে
যদি শিরক না থাকে। এবং সে মানুষ যদি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে
আল্লাহ তার সামনে আকাশ পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে হাজির হবেন। তিনি পরোয়া করবেন না তার
গুনাহ কত বড় এবং কতগুলো। এ থেকে বোঝা যায় গুনাহ মাফ চাইলে লাভ আছে কোন ক্ষতি
নেই।
গুনাহ মাফের ক্ষেত্রে অন্তরায়
অন্তরায় শব্দের অর্থ হলো বাধা। গুনাহ মাফের ক্ষেত্রে অন্তরায় অর্থ হল আল্লাহ
তায়ালা কোন বান্দাকে গুনাহ মাফ করে দিবেন কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সেই গুনাহ মাফের
পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। অর্থাৎ কিছু কাজ এবং কিছু বিশ্বাসের কারণে গুনাহ মাফের পথ
রুদ্ধ হয় অর্থাৎ বাধাগ্রস্ত হয়। যদি কোন ব্যক্তি গুনাহ করার পর সেটি তাওবা করতে
দেরি করে। একজন মুমিনের উচিত গুনাহ করার সাথে সাথেই তাওবা করে ফেলা। কেননা গুনাহ
করার সাথে সাথে তাওবা করে ফেলাটা সেই মুমিনের ওপর ওয়াজিব হয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে সূরা আল নিসাতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাওবা তাদের জন্য নয় যারা
গুনাহ করতে করতে মৃত্যুর মুহূর্তে বলে আমি তাওবা করছি। অর্থাৎ মৃত্যুর সময় এসে
গেলে তাওবা করে কোন লাভ হবে না। কাজেই আমাদের উচিত হবে গুনাহ করার সাথে সাথেই
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। এছাড়াও যদি কেউ তার গুনাহকে ছোট মনে করে তুচ্ছ
তাচ্ছিল্য করে তাহলে এই বিশ্বাসটি তার গুনাহ মাফের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
মহানবী (সা) বলেন আমার উম্মতের সকল গুনাহ মাফ হতে পারে কিন্তু যারা প্রকাশ্যে
গুনাহ করেন তারা নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুনাহ
আজকাল ফিতনার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমগুলো সূচিত হয়েছিল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে। কিন্তু আজকাল সেই
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে রুজির ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আর এই কারণে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি হয়ে গেছে। প্রতিটি মানুষ বর্তমানে
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম এই যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবহার করে
থাকেন। ফেসবুক এবং ইউটিউবে বর্তমানে অশ্লীল কিছু ভিডিও রিলস আকারে সামনে চলে আসতে
পারে।
এগুলো দেখা এক প্রকার গুনাহের কাজ। আল্লাহ তায়ালা নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখতে
বলেছেন। এছাড়াও আজকাল সোসিয়াল মিডিয়া অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক
ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে ব্যঙ্গ করে। এটিও একটি গুনাহের কারণ। অনেক সময় বিভিন্ন
কমেন্টে বিশেষ করে ফেসবুকে বিভিন্ন পেইজে কমেন্ট যুদ্ধের মাধ্যমে এক ব্যক্তি অপর
ব্যক্তিকে গালাগালি করে। এই গালাগালি করাটিও একটি গুনাহ এর কাজ। তাই সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া গুনাহ থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে। এবং নিজের অন্তরকে
পরিশুদ্ধ করতে হবে।
গুনাহ থেকে বাঁচতে করণীয়
প্রত্যেক মুমিনেরই উচিত গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা। আর এ গুনাহ থেকে বাঁচতে
হলে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। করনীয় সমূহের মধ্যে প্রথমে যে বিষয়টি উল্লেখিত
হয় সেটি হল আল্লাহর ভয় অন্তরে প্রবেশ করানো। যখন কোন মানুষ নিজের ভিতরে আল্লাহর
ভয় প্রবেশ করাবে তখন সে সকল প্রকার গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সক্ষম হবে। সে কোন
গুনাহের দিকে তার পা বাড়াবে না। এছাড়াও আত্মশুদ্ধি এবং সচেতনতার মধ্য দিয়ে
গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচানো যায়।
নিয়মিত সালাত আদায় করার মাধ্যমে এবং রোজা রাখার মাধ্যমে গুনাহ থেকে নিজেকে
বাঁচানো সম্ভব। এর পাশাপাশি যে সব বিষয়গুলো গুনাহের দিকে নিজের হৃদয়কে নিয়ে
যায় সেই বিষয়গুলো থেকেই নিজেকে বাঁচাতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বন্ধু
নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভালো মানুষকে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করতে হবে। কেননা কথিত
আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। সৎ বন্ধু নির্বাচন করলে সেই বন্ধুর
মাধ্যমেও আপনি জান্নাতে যেতে পারেন। এভাবে নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচাতে হবে।
মন্তব্যঃ গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত
গুনাহ মাফের দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কে আজকের সম্পূর্ণ
আর্টিকেলে
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। একজন মানুষের গুনাহ যতই বেশি হোক না কেন সেই
মানুষটির মনে রাখা উচিত আল্লাহ তায়ালার একটি গুণবাচক নাম হল আল গাফফার। যার
শাব্দিক অর্থ হলো আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল। আজকের আর্টিকেলে কিছু হাদিস ও উল্লেখ
করা হয়েছে। যে হাদিস সমূহ থেকেও বোঝা যায় আল্লাহ তায়ালা কতটা ক্ষমাশীল এবং
কতটা দয়ালু। তাই কোন মানুষের উচিত হবে যদি কোন পাপ করে ফেলে,
তাহলে হতাশ না হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া এবং পরিশুদ্ধ হৃদয় নিয়ে তাওবা
করা। এই তাওবা করার মাধ্যমেই সে আল্লাহর নিকট হতে ক্ষমা পাবে এবং আখিরাতে মুক্তি
পাবে। তারপর প্রত্যেকের উচিত অন্তত দিনে এবং রাতে একবার করে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার
পাঠ করা। এবং যখনই সুযোগ পাওয়া যাবে তখনই মনে মনে ইস্তেগফার পাঠ করা। আমাদের
আর্টিকেল গুলো নিয়মিত পড়ুন এবং এগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে আমাদের সাথেই থাকুন।
নিজেকে এবং প্রিয়জনদের গুনাহ থেকে বাঁচান।250510
protipsbangla নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url