ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ জানুন
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ঘন ঘন
মাথাব্যথা ও জ্বর হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম কারণ
হলো ভাইরাল সংক্রমণ। এছাড়াও আরোও অনেক কারণ আছে যেগুলো সম্পর্কে নিচে
জানবো।
ভাইরাল সংক্রমণের পাশপাশি জ্বর ও মাথা ব্যাথা হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়
সাইনুসাইটিস, মাইগ্রেন, টাইফয়েড জ্বর ছাড়াও আরোও অনেক সাধারণ কিছু রোগ। এখন আমরা
এই সমস্যা কেন হয় ও প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ
- ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ
- ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে করনীয়
- ঘন ঘন মাথা ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
- জ্বর ভালো করার সহজ ঘরোয়া উপায়
- মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া উচিত
- মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া উচিত নয়
- মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যে সাধারণত ভুল গুলো করা যাবে না
- ভাইরাল ইনফেকশন থেকে জ্বর ও মাথাব্যথা হওয়ার লক্ষন
- ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায়
- শেষ কথাঃ ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সাধারণত ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তার
মধ্যে উন্নতম যে কারণ সেটি হচ্ছে ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ।
অর্থাৎ ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, ডেঙ্গু, সাইনোসাইটিস বা টনসিলাইটিসের
মতো সংক্রমণে মাথা ব্যাথার সাথে জ্বর দেখা যায়। উপরের এই রোগ গুলো হলে আমাদের
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক মাত্রায় কমে যায়। যার ফলে একটু পর পর মাথা
ব্যাথা থেকে শুরু করে জ্বর হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র ভাইরাল বা
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণেই যে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হবে এই কথাটি
সম্পূর্ন ঠিক নয়। এই দুই কারণ ছাড়াও আরোও অনেক কারণ আছে যার কারণে ঘন ঘন
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হতে পারে। এই কারণ গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
- ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, ডেঙ্গু, সাইনোসাইটিস বা টনসিলাইটিসের মতো সংক্রমণ হলে।
- সাইনাসে প্রদাহ হলে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা হয় বিশেষ করে কপালের মাঝখান ও চোখের চারপাশে ব্যাথা করে।
- মাইগ্রেনের কারণে তীব্র মাথা ব্যাথা হয় যা মাঝে মাঝে হালকা জ্বরের অনুভূতি হতে পারে।
- শরীরে পানির অভাব হলে মাথা ব্যাথা এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে এবং জ্বর আসার মতো অনুভূতিও হতে পারে।
- চোখের দৃষ্টি সমস্যার কারণে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং মাথা ব্যাথা হতে পারে।
- করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হতে পারে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতার কারণে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হতে পারে।
- থাইরয়েড, অ্যানিমিয়া বা অন্য কোন হরমোন ভারসাম্যহীনতা থেকেও মাথা ব্যাথা ও জ্বর হতে পারে।
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে করনীয়
অনেকে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে খুব একটা গুরুত্ব সহকারে দেখেন না।
এই কাজটি মোটেও উচিত নয়। কারণ এটি অনেকে সাধারণ একটি সমস্যা বলে মনে করলেও
এটি হতে পারে অন্য কোন রোগের লক্ষন। তাই আপনার যদি এই সমস্যা যদি হয় তাহলে
এটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা। কেননা এটি যদি অন্য কোন রোগের লক্ষন হয় তাহলে
আপনি অল্পতেই সতর্ক হতে পারবেন এবং সঠিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।
আবার যদি আপনি এটি সাধারণ রোগ বলে বসে থাকেন তাহলে সঠিক চিকিৎসার অভাবে কোন
বড় ধরনের রোগও হতে পারে। তাই আমাদের জানা উচিত আপনারোও যদি এই সমস্যা হয়
তাহলে করনীয় কি। নিচে ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে করনীয় কি তা তুলে
ধরা হলো।
আরোও পড়ুনঃ খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা
- সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য দ্রুত একজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া।
- রক্ত ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।
- শরীরকে হাইড্রেট রাখতে প্রচুর পানি, স্যালাইন ও ফলের রস পান করতে হবে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল বা উপযুক্ত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
- চোখের সমস্যা থাকলে তা মাথা ব্যাথার কারণ হতে পারে তাই চোখের চেকআপ করানো উচিত।
- ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করতে হবে।
- সাইনাসের কারণে মাথা ব্যাথা হলে গরম পানির সেঁক দেওয়া।
- চিকিৎসা নেওয়ার পরও পুনরায় সমস্যা হলে আবার ডাক্তার দেখাতে হবে।
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
ঘন ঘন মাথা দূর করার জন্য অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এগুলো যদি আপনি নিয়মিত ও
পরিমাণ মত অনুসরণ করেন তাহলে খুব সহজে এই মাথা ব্যাথা দূর করতে পারবেন। অনেকে
মাথা ব্যাথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই অনেক ঔষুধ সেবন করে থাকেন। এই
অভ্যাসটি মোটেও ভালো নয় বরং অভিজ্ঞ ডাক্তারের মরামর্শ ছাড়া এই সকল ঔষুধ গুলো
সেবন করলে পরবর্তিতে দীর্ঘ মেয়াদি কোন অসুখ হতে পারে। তাই এই ধরনের ঔষুধ সেবন
করার পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এখন
আমরা ঘন ঘন মাথা ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানবো।
মাথা ব্যাথা দূর করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে আদা চা পান করা। আদা
প্রদাহ কমায় ও মাথা ব্যাথা উপশমে সাহায্য করে। তবে আদা চা পান করার সময় স্বাদ
বাড়ানোর জন্য চিনি যোগ করা যাবে না। স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনি চিনির পরিবর্তে
মধু ও লেবু যোগ করতে পারেন। এছাড়াও ঘরোয়া উপায়ে মাথা ব্যাথা কমানোর
জন্য কপালে ও কপালের পাশে পিপারমিন্ট অয়েল ম্যাসাজ করতে পারেন। এই অয়েল
ম্যাসাজ করলে মাথা অনেক ঠান্ডা হয়ে যায় এবং ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও
আপনি যদি অল্পতেই মাথা ব্যাথা কমাতে চান তাহলে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান
করতে পারেন। তবে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় অতিরিক্ত পান কয়া উচিত নয়।
জ্বর ভালো করার সহজ ঘরোয়া উপায়
জ্বর ভালো করার জন্য অনেক কার্যকরী ঘরোয়া উপায় রয়েছে। আপনি যদি এই ঘরোয়া
পদ্ধতিগুলো নিয়মিত ও পরিমাণমতো অনুসরণ করেন তাহলে সহজেই জ্বর নিয়ন্ত্রণে
আনতে পারবেন। অনেকেই জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই বিভিন্ন ওষুধ
সেবন করে থাকেন যা একটি খারাপ অভ্যাস। বিশেষ করে বারবার প্যারাসিটামল বা
অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ খাওয়া দীর্ঘমেয়াদে কিডনি বা লিভারের উপর
ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যেকোনো ওষুধ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই একজন
অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এখন আমরা জ্বর ভালো করার কিছু ঘরোয়া
উপায় সম্পর্কে জানবো।
জ্বর কমানোর সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হচ্ছে গরম পানিতে ভেজানো পাতলা
তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে দেওয়া বা সেঁক দেওয়া। এটি শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও জ্বরের সময় শরীর যাতে পানিশূন্য না হয়ে পড়ে
সেজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি বা ফলের রস পান করা
গুরুত্বপূর্ন একটি কাজ। গরম পানি দিয়ে তৈরি তুলসী পাতার চা বা আদা চাও
জ্বরের উপশমে অত্যন্ত উপকারী। এই চা পান করলে শরীরের ভিতরের জ্বালা ও
প্রদাহ কমে আসে। মধু ও লেবু মিশিয়ে গরম পানি পান করলেও শরীর শীতল হয় এবং
জ্বর দ্রুত কমে আসে। একইসাথে হালকা, সহজপাচ্য খাবার খাওয়া এবং যথেষ্ট
বিশ্রাম নেওয়াও জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম।
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া উচিত
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে কিছু নির্দিষ্ট খাবার আছে যে গুলো খাওয়ার ফলে মাথা
ব্যাথা ও জ্বর থেকে অনেকটাই উপশম পাওয়া যায়। মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে
শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই এই সময় কিছু
নির্দিষ্ট পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত যা দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা
করে। তবে এক্ষেত্রে অনেকে একটি ভুল করে থাকে সেটি হচ্ছে জ্বর ও মাথা ব্যাথা
থাকা স্বত্বেও স্বাভাবিক খাবার গুলো গ্রহণ করে থাকে যার ফলে খাবার গুলো হজমে
সমস্যা হয়। এর ফলে এই সমস্যাটি আরোও বাড়তে থাকে। তাই আমাদের প্রত্যেকের জানা
উচিত মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। নিচে
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসব খাবার খাওয়া উচিত তা তুলে ধরা হলো।
- গরম মুরগির স্যুপ
- সবজি স্যুপ
- ডাবের পানি
- মাল্টার রস
- কমলার রস
- নরম ভাত
- ডাল
- আপেল
- কলা
- পেঁপে
- গরম পানি
- আদা চা
- তুলসী চা ইত্যাদি।
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া উচিত নয়
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে কিছু নির্দিষ্ট খাবার আছে যেগুলো এ সময় খাওয়া
একেবারেই উচিত নয়। কারণ এসব খাবার শরীরের জ্বর ও ব্যথার প্রকোপ আরও বাড়িয়ে
দিতে পারে। জ্বর ও মাথা ব্যাথার সময় শরীর অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং
হজম ক্ষমতা দুর্বল থাকে। এই সময়ে যদি ভারী, তেলঝাল বা প্রক্রিয়াজাত খাবার
খাওয়া হয় তাহলে তা শরীরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে এবং সুস্থ হওয়ার
প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। অনেকে আবার এই সময়েও স্বাভাবিকভাবে ঝাল মসলাযুক্ত
খাবার, ফাস্টফুড বা ঠান্ডা পানীয় গ্রহণ করেন যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং
অসুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। তাই মাথা ব্যাথা ও জ্বরের সময় যেসকল খাবার
পরিহার করা উচিত তা জানা প্রত্যেকের জন্য জরুরি একটি কাজ। মাথা ব্যাথা
ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া উচিত নয় তা নিচে তুলে ধরা হলো।
আরোও পড়ুনঃ ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
- অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার
- তেলেভাজা ও ভাজাপোড়া খাবার
- ফাস্টফুড
- ঠান্ডা পানীয় বা বরফমিশ্রিত জুস
- চকলেট ও অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত খাবার
- প্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবার
- গরু বা খাসির মাংস
- অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার বা মিষ্টি
- টকজাতীয় খাবার
- দুধ বা দুধজাতীয় ভারী খাবার ইত্যাদি।
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে যে সাধারণত ভুল গুলো করা যাবে না
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে আমরা অনেকে নানান রকম ভুল করে থাকি। এই কারণে এই
সমস্যা গুলো দ্রুত ভালো হওয়ার পরিবর্তে আরোওব সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই আমাদের
এই ভুল গুলো সম্পর্কে জানা উচত এবং এই ভুল গুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। সবার
প্রথমে আমরা যে ভুলটি করে থাকি সেটি হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া
প্যারাসিটামল বা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে থাকি। এর ফলে সাময়িক ভাবে বা সাথে
সাথে এই মাথা ব্যাথা ও জ্বর ভালো হয়ে গেলেও পরবর্তিতে যখন
আবার মাথা ব্যাথা ও জ্বর হবে তখন এই ঔষুধ গুলো কার্যক্ষমতে কমতে শুরু
করবে। অর্থাৎ প্রথম বার এক দিন ঔষুধ খেলেই ভালো হয়ে গেলো এরপর দ্বিতীয়বার
একই মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে এক দিনের পরিবর্তে দুই বা তার বেশি দিন ঔষুধ
খাওয়া লাগতে পারে। এইভাবেই ঔষুধের কার্যক্ষমতা কমতে শুরু করে।
এরপর যে ভুলটি প্রায় সকলেই করে থাকে সেটি হচ্ছে পরিমাণ মত না ঘুমানো বা
বিশ্রাম না নেওয়া। মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে আমাদের শরীরকে পর্যাপ্ত
পরিমাণ ঘুম ও বিশ্রাম দিতে হয়। এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতে বাড়তে
সাহায্য করে থাকে। আপনি যদি পরিমাণ মত না ঘুমান তাহলে রোগ প্রতিরোধ ঠিক মত
হবেই না বরং এই সমস্যা আরোও জটিল হতে শুরু করতে পারে। তাই পরিমাণ মত ঘুমানো
অনেক গুরুত্বপুর্ন কাজ। অনেকে আবার মাথা ব্যাথা ও জ্বর হলে ঠান্ডা পানি
দিয়ে গোসলের পাশাপাশি ঠান্ডা খাবার ও পানীয় সেবন করে থাকেন যা শরীরের জন্য
অনেক ক্ষতিকর। অনেকে আবার অনিয়ম করে খাবার খান। পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য
খাবার না খেয়ে ফাস্টফুড বা ভারী খাবার খেলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই এই
ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। উপরের এই কারণ গুলো ছাড়াও আরোও অনেক কারণ
আছে যার কারণে এই মাথা ব্যাথা ও জ্বর আরোও বাড়তে পারে।
ভাইরাল ইনফেকশন থেকে জ্বর ও মাথাব্যথা হওয়ার লক্ষন
ভাইরাল ইনফেকশন থেকে জ্বর ও মাথাব্যথা হওয়ার অনেক গুলো লক্ষন আছে। এই লক্ষন
গুলো যদি আপনার মধ্যে থেকে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার ভাইরাল ইনফেকশন
থেকে জ্বর ও মাথাব্যথা হচ্ছে। তবে তার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত ফাইরাল
ইনফেকশন কি। ভাইরাল ইনফেকশন হলো এমন এক ধরনের সংক্রমণ যা ভাইরাসের কারণে
হয়ে থাকে। ভাইরাস হলো অতি ক্ষুদ্র আকারের জীবাণু যা দেহের কোষে প্রবেশ
করে সেগুলোর কার্যপ্রণালী নষ্ট করে দেয় এবং অসুস্থতা সৃষ্টি করে। এখন
আমরা ভাইরাল ইনফেকশন থেকে জ্বর ও মাথাব্যথা হওয়ার লক্ষন গুলো সম্পর্কে
জানবো।
- শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যেয়ে হঠাৎ জ্বর হওয়া।
- মাঝারি থেকে তীব্র মাত্রার মাথাব্যথা হয় কখনও চোখের চারপাশেও ব্যথা অনুভূত হয়।
- শরীরে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর ওঠে ও প্রচুর ঠান্ডা লাগা।
- গলায় জ্বালাপোড়া বা ব্যথার পাশাপাশি খুসখুসে কাশি হওয়া।
- শরীরে ব্যথা বা দুর্বলতা, পেশিতে ব্যথা, শরীরে ক্লান্তি ও অস্বস্তি অনুভব হওয়া।
- জ্বর ও মাথাব্যথার সাথে নাক বন্ধ বা সর্দি লাগা।
- চোখে অস্বস্তি বা পানি পড়া এবং চোখে জ্বালা করা।
- জ্বর ওঠার পর শরীর ঘামতে শুরু করা।
- ক্ষুধা কমে যায় ও সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব লেগে থাকা।
- বমি বমি ভাব বা হালকা বমি হওয়া ইত্যাদি।
ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায়
ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর
সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘুমের অভাব শরীর ও মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব
ফেলে এবং দিনভর ক্লান্তি ও অস্থিরতা তৈরি করে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি
পেতে হলে প্রথমেই একটি নিয়মিত ঘুমের রুটিন মেনে চলা জরুরি একটি কাজ। রাতে
ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টিভি স্ক্রিন ব্যবহার কমিয়ে ঘর অন্ধকার ও শান্ত
রাখলে ঘুম সহজে আসে। এছাড়াও রাতে ভারী খাবার এড়িয়ে চলা এবং দিনে হালকা
ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়তে হবে। ঘুমের আগে হালকা গান শোনা বা মেডিটেশন করলে
ঘুম তাড়াতাড়ি চলে আসে।
অন্যদিকে মানসিক চাপ দীর্ঘমেয়াদি হলে তা হতাশা, উদ্বেগ ও শারীরিক অসুস্থতার
কারণ হয়ে উঠতে পারে। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত মেডিটেশন,
প্রশ্বাসের ব্যায়াম খুব উপকারী একটি উপায়। নিজের ভালো লাগার কাজ যেমন বই
পড়া, গান শোনা বা গার্ডেনিং করলে মন ভালো থাকে। যেকোনো সমস্যা বা
দুশ্চিন্তা কারো সঙ্গে ভাগ করে নিলে চাপ অনেকটাই কমে যায়। পাশাপাশি নিজেকে
সময় দেওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ। মানসিক সুস্থতার জন্য নিজের যত্ন নেওয়া
অনেক গুরুত্বপূর্ন একটি কাজ। তবে উপরের দেওয়া তথ্য গুলো কাজ করলেও আপনার
উচিত হবে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরনাপূর্ন হয়ে এই বিষয়ে সুচিকিৎসা নেওয়া।
শেষ কথাঃ ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ
ঘন ঘন মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করা
যায় যে আপনি যদি উপরের লিখা গুলো ভালোভাবে মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে ঘন ঘন
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ গুলো সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। আপনার শুধু
মাথা ব্যাথা ও জ্বর হওয়ার কারণ সম্পর্কে তুলে ধরিনি বরং মাথা ব্যাথা ও জ্বর
হলে কিভাবে ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে সুস্থ হওয়া যায় এই সম্পর্কেও আলোচনা করেছি। এর
পাশাপাশি এই সমস্যা হলে অনেকে যে ভুল গুলো করে এই ভুল গুলো তুলে ধরেছি ও মাথা
ব্যাথা ও জ্বর হলে যেসকল খাবার খাওয়া যাবে ও যেসকল খাবার খাওয়া যাবে না এই বিষয়
নিয়েও আলোচনা করেছি। তাই আশা করা যায় যে উপরের তথ্য গুলো পড়লে মাথা ব্যাথা ও
জ্বর হওয়ার কারণ থেকে শুরু করে আরোও অনেক কিছু জানতে পারবেন। 250311
protipsbangla নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url