ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। ইসবগুলের ভুসি হচ্ছে এক ধরনের ফাইভার জাতীয় খাদ্য যা বিশেষ করে পাচনতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। সঠিক নিয়মে এটি সেবন করলে স্বাস্থগত দিক থেকে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
ইসবগুলের ভুসি নিয়মিত ও সঠিক নিয়মে সেবন করলে অল্প দিনের মধ্যেই পাচনতন্ত্রের সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের মত কাজও করতে পারে। তবে সঠিক নিয়মে সেবন না করলে উপকারের চাইতে ক্ষতিও করতে পারে। তাই এই বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- ইসবগুলের ভুসি কি ও কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
- ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে ইসবগুলের ভুসির ভূমিকা
- কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
- ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি কতটা কার্যকর
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অপকারিতা
- কাদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়া উচিত নয়
- শেষ কথাঃ ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। ইসবগুলের
ভুসি হচ্ছে একধরনের ফাইভার জাতীয় খাদ্য। ফাইবার জাতীয় খাদ্য আমাদের
শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাদ্য উপাদান। আমরা অনেকে জেনে থাকবো এই
ফাইভার জাতীয় খাদ্য বিশেষ করে উদ্ভিদ ভিত্তিক খাদ্য গুলো
যেমনঃ শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, শস্যদানা ইত্যাদি খাদ্যে পাওয়া যায়। এই
খাদ্য গুলোর মধ্যে অর্থাৎ উদ্ভিদ ভিত্তিক খাদ্য গুলোর মধ্যে ইসবগুলের
ভুসিতে প্রচুর পরিমাণ ফাইভার পাওয়া যায়। শুধু ফাইভার নয় বরং ইসবগুলের
ভুসিতে আরোও অনেক পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। এখন আমরা ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
- হজমশক্তি বাড়ায় ও গ্যাস, অম্বল কমিয়ে পাচনতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- পেট ভরা রাখে, ফলে ক্ষুধা কম লাগে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ধীরে বাড়ায় ও ইনসুলিন রেসপন্স উন্নত করে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- খারাপ কোলেস্টেরল বা LDL কমাতে সাহায্য করে।
- কোলেস্টেরল ও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের ঝুঁকি কমায়।
- ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানার মত রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে থাকে।
- হেমোরয়েড বা পাইলস কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- শরীর থেকে টক্সিন বের করে ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- অন্ত্র পরিষ্কার করে শরীরের বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহয্য করে থাকে।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ইসবগুলের ভুসি একটি প্রাকৃতিক দ্রবণীয় ফাইবার জাতীয় খাদ্য হওয়ার কারণে
এটি নিয়মিত সেবনের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক, ওজন
নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। তবে এটি সেবন
করার একটি নিয়ম আছে। আপনি যদি শরীরের উপকারের আশায় এটি নিয়মিত সেবন করে যান
কিন্তু এটি খাওয়ার আসল নিয়ম না জানেন তাহলে এটি আপনার উপকারের চাইতে ক্ষতির
পরিমাণ বেশি হতে পারে। তাই এক কথায় বলতে গেলে ইসবগুলের ভুসির সর্বোচ্চ
উপকারিতা পেতে হলে সঠিক নিয়মে খাওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে
বিস্তারিতভাবে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম তুলে ধরা হলো।
আরোও পড়ুনঃ খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে মূলত খালি পেটে সকালে। আপনি চাইলে
অন্যান্য সময় গুলোতে যেমন রাতের খাবারের পরেও খেতে পারেন। তবে সকালে
খালি পেটে সবন করলে তুলনা মূলক একটু বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। সকালে খালি
পেটে হালকা গরম পানি বা দুধে মিশিয়ে খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করতে ভালো কাজ করে। আবার রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়ার ফলে রাতের খাবার হজমে
সহায়তা করে ও সকালে সহজে পায়খানা হতে সাহায্য করে। এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
হচ্ছে এক গ্লাস পানিতে ১ থেকে ২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে হবে।
আপনি চাইলে দুধের সাথেও খেতে পারেন। স্বাদ বাড়ানোর জন্য লেবু যোগ করতে পারেন
তবে এর সাথে চিনি না খাওয়া ভালো।
ইসবগুলের ভুসি কি ও কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
ইসবগুলের ভুসি হলো ইসবগুল গাছের বীজের বাইরের খোসা। মূলত এই খোসাকেই বলা
হয় ইসবগুলের ভুসি। ইসবগুলের ভুসির বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে
Plantago ovata ইসবগুলের ভুসি সহজে চেনার উপায় হচ্ছে এটি পানির
সংস্পর্শে এলে জেলের মতো একটি পদার্থ তৈরি করে ফেলে। ইসবগুলের ভুসি
সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহৃত হয় তবে এর আরও
অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ইসবগুলের ভুসি সাধারণত বাজারের মুদি
খানার দোকান গুলোতে পাওয়া যায়। আবার অনেক ফার্মেসি ও মেডিসিন শপ গুলোতেও
এটি পাওয়া যায়। তবে বাজারে মুদি খানার দোকানে যে ইসবগুলের ভুসি পাওয়া
যায় তা ফার্মেসি ও মেডিসিন শপ গুলো থেকে সম্পূর্ন আলাদা।
বাজারে মুদি খানার দোকানের ইসবগুলের ভুসি ফার্মেসি ও মেডিসিন শপ
গুলো থেকে সম্পূর্ন আলাদা হওয়ার কারণ হচ্ছে বাজারে মুদি খানার দোকানের
ইসবগুলের ভুসি গুলো সাধারণত সরাসরি প্রক্রিয়াজাত হয়ে বাজারে চলে আসে। অর্থাৎ
এটি সম্পূর্ন অর্গানিক হয়ে থাকে। অপর দিকে ফার্মেসি ও মেডিসিন শপ গুলোতে
যে ইসবগুলের ভুসি পাওয়া যায় এগুলোতে বিভিন্ন ফ্লেভার ও মেডিসিন দিয়ে
বিভিন্ন ফ্লেভারের স্বাদ দেওয়া হয়। যার ফলে এগুলোর গুনগত মান নিয়ে অনেক
বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন করে থাকেন। তাই ইসবগুলের ভুসি সব সময় অর্গানিক দেখে
ক্রয় করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও ইসবগুলের ভুসি বর্তমান সময়ে অনেক অনলাইন
শপ গুলোতেও পাওয়া যায়। গুনগত মান, রিভিও ও দাম দেখে আপনার অনলাইন থেকেই এটি
ক্রয় করতে পারেন।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে ইসবগুলের ভুসির ভূমিকা
ইসবগুলের ভুসি হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক দ্রবণীয় ফাইবার যা রক্তে শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি মূলত হজমপ্রক্রিয়াকে
ধীর করে এবং গ্লুকোজ শোষণের গতি কমায় অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে শোষন
হয়ে থাকে যার ফলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। সাধারণত ইসবগুলের ভুসি
খাওয়ার পর এটি পাকস্থলীতে প্রবেশ করে পানি শোষণ করে জেলির মতো পদার্থে
পরিণত হয়। এই জেলি হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয় ফলে খাবারের গ্লুকোজ ধীরে ধীরে
রক্তে প্রবেশ করে। এতে রক্তে হঠাৎ করে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় না। এছাড়াও
ইসবগুলের ভুসি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ও পরিমাণ মত ইসবগুলের ভুসি
খাওয়ার ফলে একজন ডায়বেটিস রোগীর রক্তের ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়ায় যার
ফলে দেহ সহজে গ্লুকোজ গ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও খাবার আগে ইসবগুলের ভুসি
খাওয়ার ফলে ক্ষুধা কমায় যার ফলে খাবার অতিরিক্ত খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
এছাড়াও কোন ডায়বেটিস রোগী যদি খাবারের সাথে অথবা খাবারের পরে সাথে
সাথে ইসবগুলের ভুসি সেবন করে তাহলে রক্তে শর্করা অনেক অংশে কমাতে
সাহায্য করে থাকে। তবে এই উপকারিতা গুলো পাওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়ম
মেনে ইসবগুলের ভুসি খেতে হবে। তবে ডায়বেটিসের ঔষুধ খাওয়ার পর
কিছুক্ষন পর ইসবগুলের ভুসি খাওয়া উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
কোষ্ঠকাঠিন্য হলো এমন একটি হজমজনিত সমস্যা যেখানে মলত্যাগ কঠিন, অনিয়মিত বা
কষ্টকর হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে এটি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে
উঠেছে। কোষ্ঠকাঠিন্যে হওয়ার সাধারণ যে লক্ষন গুলো সেগুলো
হচ্ছে সপ্তাহে তিন বার বা তার কম মলত্যাগ হওয়া, মল শক্ত ও শুষ্ক
হয়, মল ত্যাগে বেশি চাপ প্রয়োগ করতে হয়, পেট ফুলে থাকে বা অস্বস্তি
লাগে, মলত্যাগের পরেও অসম্পূর্ণ অনুভব হয় ইত্যাদি। কোষ্ঠকাঠিন্যে
হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফাইভার যুক্ত খাবার কম খাওয়া। এখন
আমরা কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
খাওয়ার উপায় | খাওয়ার নিয়ম |
---|---|
পানির সাথে | ১ চা চামচ ইসবগুল ১ গ্লাস পানির সাথে |
দইয়ের সাথে | ১ চামচ ইসবগুল ১ কাপ দইয়ে মিশিয়ে |
গরম দুধের সাথে | ১ চা চামচ ইসবগুল ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে |
লেবু পানিতে | ১ গ্লাস পানিতে ১ চামচ ইসবগুল ও পরিমাণ মত লেবুর সাথ |
ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি কতটা কার্যকর
ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি সরাসরি সাহায্য করতে পারে না। কারণ আমাদের ওজন বাড়ে
মূলত শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি জমলে। ইসবগুলের ভুসি সরাসরি চর্বি
গলিয়ে ফেলতে পারে না তবে এটি পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে থাকে।
আমরা ইতিমধ্যে জেনে ইসবগুলের ভুসি এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার জাতীয় খাদ্য
ঠিক এই কারণে এটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে হজম প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে করে ফলে ক্ষুধা
লাগার প্রবণতা অনেক কমিয়ে আনে। এখন আমরা জানার চেষ্টা করবো ওজন কমাতে
ইসবগুলের ভুসি কিভাবে সাহায্য করে এই বিষয়ে।
- ইসবগুলের ভুসি ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- ইসবগুলের ভুসি খাবারের ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে।
- ইসবগুলের ভুসি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- এটি শরীরে চর্বি জমার সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে।
- অন্ত্র পরিষ্কার করে এবং পাচনতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করতে সাহায্য করে থাকে ইত্যাদি।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সকল জিনিসের উপকারিতার দিক থাকলে তার কিছু ক্ষতিকর দিক গুলোও থেকে থাকে।
যদিও ইসবগুলের ভুসি আপনি যদি সঠিক নিয়ম মেনে সবন করেন তাহলে এটি আপনার
শরীরের জন্য অনেক উপকারে আসবে তবুও কিছু অসতর্কতা ও অনিয়মের কারণে কিছু
সাময়িক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। তবে বলে রাখা ভালো যে বিশেষ
কোন ঔষুধ, বিশেষ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্ত্রে কোন সমস্যা না
থাকলে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিবে না বলে
আশা করা যায়। এখন আমরা ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সম্পর্কে জানবো।
- পর্যাপ্ত পানি ছাড়া খেলে গলা বা খাদ্যনালীতে আটকে যেতে পারে।
- হজমে অসুবিধা হলে পেট ফাঁপা বা অতিরিক্ত গ্যাস হতে পারে।
- অতিরিক্ত খেলে মল নরম হয়ে অতিরিক্ত পায়খানা হতে পারে।
- কিছু ক্ষেত্রে চুলকানি, চামড়ায় ফুসকুড়ি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- হজমে সমস্যা হলে বা পানি কম খেলে পেটব্যথা হতে পারে।
- ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে।
- নতুন খাওয়া শুরু করলে কখনও কখনও হালকা বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
- যাদের অন্ত্রে আগে থেকেই কোনো সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে খাদ্যনালীতে বাধা সৃষ্টি হতে পারে ইত্যাদি।
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অপকারিতা
উপরে আমরা এতক্ষন শুধু ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে
এসেছি কিন্তু ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে। এখন আমরা সেই
অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। সাধারণত নিয়ম মেনে ইসবগুলের
ভুসি সেবন করলে কোন অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক লক্ষ্য করা যায় না তবে অনিয়মিত
ভাবে বা এটি খাওয়ার সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করলে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তার মধ্যে অন্যতম হলো পাতলা পায়খানা। কারণ আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি
যে ইসবগুলের ভুসি ফাইভার জাতীয় খাদ্য ঠিক এই কারণেই এটি নিয়ম না মেনে
পরিমাণে বেশি খেলে পাকস্থলীতে ফাইভারের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে মলকে পাতলা করে
ফেলে যার ফলে পাতলা পায়খানা থেকে শুরু করে ডায়রিয়ারও হতে পারে।
আরোও পড়ুনঃ বাতের ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা ও মুক্তির উপায়
এছাড়াও আরোও একটি উল্লেখযোগ্য অপকারিতার দিক হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া
খেলে গলায় বা অন্ত্রে আটকে যেতে পারে। কারণ ইসবগুল পানি শোষণ করে ফুলে
ওঠে। যদি আপনি যথেষ্ট পানি না খান তাহলে এটি গলায় বা খাদ্যনালীতে আটকে যেতে
পারে যা শ্বাসকষ্টের মতো বিপজ্জনক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এরপর নিয়ম না
মেনে এটি সেবন করার ফলে পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা হতে
পারে। ইসবগুল হজমের সময় অন্ত্রে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি করতে পারে বিশেষ
করে যাদের পেট আগে থেকেই স্পর্শকাতর তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হতে পারে।
এছাড়াও পেটব্যথা, বমিভাব, অ্যালার্জি
প্রতিক্রিয়া, অন্ত্রে বাধা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে
পারে। ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার ফলে এই সমস্যা গুলো যদি আপনারও দেখা দেয়
তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটি না খাওয়ায় ভালো।
কাদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়া উচিত নয়
কাদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু মানুষের এটি
খাওয়া একদম উচিত নয়। বিশেষ করে যাদের খাদ্যনালী বা অন্ত্রে কোনো রকম
সমস্যা আছে তাদের এটি খাওয়া একদম উচিত নয়। কারণ এই ধরনের সমস্যা থাকলেও কেউ
যদি এটি সেবন করে তাহলে এটি শাস নালিতে আটকে যেতে পারে অথবা শ্বাসকষ্ট
এর মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের মানুষ ছাড়াও আরোও অনেক মানুষ রয়েছে
যাদের এটি খাওয়া উচিত নয়। এখন আমরা এই ধরনের কিছু আরোও সমস্যার কথা জানার
চেষ্টা করবো যেগুলো কোন মানুষের থাকলে তাদের ইসবগুলের ভুসি খাওয়া উচিত
হবে না।
- যাঁরা পর্যাপ্ত পানি পান করেন না।
- যাদের খাদ্যনালী বা অন্ত্রে কোনো সমস্যা আছে।
- গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের রোগীদের সাবধানে খাওয়া উচিত।
- রক্তে শর্করা বা ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় সমস্যা থাকলে খাওয়া যাবে না।
- যাঁরা নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ নিয়মিত খান তাদের খাওয়া যাবে না।
- পেটব্যথা, বমি বা ডায়রিয়ার রোগীদের খাওয়া যাবে না ইত্যাদি।
শেষ কথাঃ ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত জেনেছি। আমরা উপরে
শুধু ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করিনি বরং এটি
কিভাবে খেতে হয় এবং কখন খেতে হয় এই বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে। ইসবগুলের ভুসি ফাইভার জাতীয় খাদ্য হওয়ার কারণে এটি একাধারে অনেক
উপকারে আসে বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে ও
ওজন কমাতে। কিভাবে ইসবগুলের ভুসি সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে,
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে ও ওজন কমানো যায় এই বিষয়ে আলাদা ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সব
শেষে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও এটি কাদের খাওয়া
উচিত নয় এই বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। তাই বলা যায় যে উপরের তথ্য গুলো
ভালোভাবে পড়লে ইসবগুলের ভুসির উপকারিতা সহ আরোও অনেক কিছু জানতে
পারবেন। 250311
protipsbangla নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url