বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা

বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা, বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা একদিকে যেমন উপকার বয়ে আনতে পারে তেমনি মারাত্মক ক্ষতিকারক কারন হতে পারে। সাধারণভাবে বন্যা মাটির উর্বরতা বাড়াতে এবং পানি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। কিন্তু একই সাথে এটি ঘরবাড়ি, ফসল,

বন্যার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

সম্পদের ক্ষতি করতে এবং রোগজীবাণু, বিস্তারের কারণ হতে পারে। বন্যার নদী ও জল ধারা গুলি জলোচ্ছার পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং কিছু ক্ষেত্রে জল সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে। আজকে আর্টিকেলে বন্যা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যগুলি জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা

বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা

বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা, বন্যা হল একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেখানে প্রচুর পরিমাণে পানি কোন নির্দিষ্ট স্থানে স্বাভাবিক সীমা অতিক্রম করে নিচু এলাকা প্লাবিত করে। সাধারণত অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, নদীর পানি উপচে পড়া, সমুদ্রের পানি উচ্চতা বৃদ্ধি, কিংবা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে বন্যা ঘাটে। বন্যার উপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

  • ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধিঃ বন্যা ভূমিকে উর্বরতা করার জন্য পরিচিত। বন্যার জন্য জল পলি মাটি বহন করে যাব জমিতে জমা হয়ে মাটি আরো উর্বর করে তোলে।
  • জলস্তর পুনরুদ্ধারঃ বন্যা নদী ও জলধারা গুলি জলস্থলে পুনরুদ্ধার করার সাহায্য করে। যা সেচ কাজ এবং অন্যান্য উদ্দেশ্যে জলের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে।
  • ভূগর্ভস্থ জলের রিচার্জঃ বন্যার পানি মাটির নিচে প্রবেশ করে ভূগর্ভস্থলে পানির উন্নত করে।
  • মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিঃ বন্যা কবলিত এলাকায় পলি মাটির সঞ্চিত হয় যা মাটিকে উপভোগ করে তোলে এবং কৃষি কাজের জন্য খুব উপযোগী গুন্ডা মাটির আদ্রতা বৃদ্ধি করে যার ফলে মাটি অনেক বেশি উর্বরতা এবং সত্যি বৃদ্ধি করে থাকে
  • জলাবদ্ধতা হ্রাসঃ বন্যা ভূগর্ভস্থলে জলের স্তর পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। যা শুষ্ক মৌসুমে জলের অভাব কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • সেচের জন্য পানি সরবরাহ করেঃ বন্যা নদী এবং জলাশয় গুলোকে পুনরায় ভরে তোলে যা সেচের জন্য অনেক উপকারী

বন্যার কারণে জীবনহানি হওয়ার। রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার, ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়া, গবাদি পশুর ক্ষতি এবং পানিবাহিত রোগে ছড়িয়ে পড়ার মত বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা হতে পারে। এছাড়া মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের ব্যাহত করতে পারে এবং পুনরাবাসন ও দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বন্যার যেমনঃ উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে নিচে বন্যার অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

আরও পড়ুনঃ ঘূর্ণিঝড়ের ১১ টি সংকেত

  • জীবন হানি ও সম্পদের ক্ষতিঃ বন্যার পানিতে ডুবে বা অন্যান্য দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যেতে পারে। ঘরবাড়ির, দোকানপাট, রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ ইত্যাদি বন্যার পানিতে ভেসে যেতে পারে যা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • ফসলহানি বা অর্থনৈতিক সংকটঃ ব্যবসা-বাণিজ্য উৎপাদন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে কৃষি জমি প্লাবিত হওয়ার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায় যা খাদ্য সংরক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এবং অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
  • গবাদি পশুর ক্ষতিঃ গবাদি পশু বন্যার পানিতে ভেসে যেতে পারে বা মারা যেতে পারে। যা প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি তৈরি করে।
  • পানিবাহিত রোগঃ নিরাপদ পানির অভাবে ডায়রিয়া কলেরা টাইফয়েড জন্ডিস হেপাটাইটিসের ইত্যাদি মতো রোগ ছড়াতে পারে। বন্যা সময় দূষিত পানীয় পরিবেশে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বন্যার আগের প্রস্তুতি 

বন্যার পূর্বাভাস বেলিবা বন্যা আসার আগে নিম্নলিখিত প্রস্তুতি গুলো নেয়া যেতে পারে। যেমনঃ
১.জরুরী সরঞ্জামঃ তৈরি করা জরুরি অবস্থা জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমনঃ শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, প্রাথমিক চিকিৎসার, সরঞ্জাম, টর্চ লাইট, ব্যাটারি, রেডিও, শুকনো কাপড় এবং নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা।
২.পরিবার ও প্রতিবেশীদের সাথে যোগাযোগঃ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য পরিবার এবং প্রতিবেশীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। যাতে জরুরি অবস্থা সবাই একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে।
৩.গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখাঃ বিদ্যুতের সুইচবোর্ড ওর মূল্যবান জিনিসপত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনে জিনিসপত্র উঁচু স্থানে সরিয়ে রাখা যাতে বন্যার পানিতে সেগুলো নষ্ট না হয়।
৪.গবাদি পশু ও ফসলের জন্য ব্যবস্থাঃ গবাদি পশু ও ফসলের জন্য নিরাপদ আশ্রয় বা স্থান তৈরি করা যাতে সেগুলো বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
৫.উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতিঃ বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে উঁচু যে স্থান বা আশ্রয় কেন্দ্র খুঁজে বের করে দ্রুত সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা।
৬.চারপাশ পরিস্কার রাখাঃ বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। যাতে বন্যার পানি সহজে বের হয়ে যেতে পারে এবং দুর্গন্ধ বার রোগ জীবাণু ছড়াতে না পারে।
৭.জরুরি অবস্থা জন্য আর্থিক সংস্থাঃ জরুরি অবস্থা জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রাখা। যাতে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করা যেতে পারে।
৮.স্থায়ী প্রশাসনের সাথে যোগাযোগঃ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার স্থানীয় প্রশাসক বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা।
৯.নিরাপদ স্থায়ী সরিয়ে নেওয়াঃ গবাদিপশু মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং বাড়ির সকলে বন্যার বিপদ সম্পর্কে সচেতন করে দেওয়াটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
১০.সতর্কতা ও সচেতনতাঃ বন্যার পূর্বাভাস পেলে বা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত ভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করা এবং অন্যদের ব্যাপারে সচেতনতা করা।

বন্যার সময় করণীয়

বন্যার পানি বাড়ির কাছাকাছি আসার আগেই আশ্রয়স্থান কেন্দ্র উঁচু করে নিতে হবে। আর বাড়ি-ঘর ছেড়ে যাওয়ার আগে গ্যাস বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিন। বন্যা শেষে আবার যখন বাড়িতে ফিরবেন তখন গ্যাস বা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিন। সম্ভব হলে বন্যা আসার আগে থেকে বাড়ি ভিটা নলকূপ টয়লেট উঁচুতে তৈরি করুন। প্রয়োজনে সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ মাত্রা নির্মাণ করুন। বন্যার আবাস পেলে শুকনো জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করুন। বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণের জন্য যোগাযোগ করুন এছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুল আবার রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানি ব্যবস্থা রাখুন। এছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদ, প্রয়োজনে জিনিসপত্র, নিরাপদে রাখুন।

১.বিশুদ্ধ পানি পানঃ মূলত বন্যার সময় ময়লা আবর্জনা মানুষ পশু পাখির মলমূত্র ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা একাকার হয়ে যায় এবং এসব উৎস থেকে জীবাণু ছড়ায়। বিশুদ্ধ পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি পান ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

২.ডায়রিয়া হলে করনীয়ঃ বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডাইরিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবন পানির অভাব পূরণ করার জন্য একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায় তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখন অসুস্থ হয়ে পড়ে ও শরীরের লবণের পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ডায়রিয়া হলে করণীয় হচ্ছে প্রথমে আপনাকে সাথে স্যালাইন রাখতে হবে নয়তো বা স্যালাইন বানানোর পদ্ধতি জানতে হবে।

বন্যার পরবর্তী করণীয়

বন্যা পরা নিরাপদ স্থলে ফিরে আসা এবং বাড়িঘর পরিষ্কার করার আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া জরুরি এছাড়া বিশুদ্ধ পানি পান ও শুকনো খাবার সংরক্ষণ করতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বন্যার পরবর্তী সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন যা পরবর্তীতে মোকাবেলা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সহায়তা হবে তুলে ধরা হলোঃ
নিরাপদ আশ্রয়ঃ 
  • কর্তৃপকের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে থাকতে হবে।
  • বন্যার পানি নেমে গেলেও কতিপকরনের মধ্যে ছাড়া বাড়ি ফেরা উচিত নয়।
  • যদি বাড়ি ফেরা নিরাপদ হয় তাহলে প্রথমে বাড়ির আশে পাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে।
  • বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানি জমে থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাঃ
  • বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবহার করতে হবে।
  • খাবার আগেও পরে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
  • বন্যাক্রান্ত এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে তাই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়।
  • শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে এবং তাদের টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
  • ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে এবং মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হয়।

বন্যা কৃষিক্ষেতে কতটা উপকারী

বন্যা কৃষিকাজের জন্য কিছু উপকারী প্রভাব ফেলতে পারে যেমন মাটির উর্বরতা করা এবং জলের স্তর উন্নত করা। বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে রয়েছে বন্যায় কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উপকারী দিক। বন্যার কিছু উপকারী প্রভাবঃ
বন্যার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
  • জমিতে পলিমাটি জমা হওয়াঃ বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে পলি মাটি জমা হয়। যা মাটিকে উর্বর করে তোলে এবং ফসলের জন্য উপকারী।
  • ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বৃদ্ধিঃ বন্যা বৃষ্টির পানিকে ধরে রাখে, যা ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং সে যে জন্য পানি সরবরাহ করে। 
  • মাটির আদ্রতা বৃদ্ধিঃ বন্যার পানি মাটির আদ্রতা বজায়। যা শুষ্ক মৌসুমে ফসল ফলানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বন্যায় নারীদের জীবনযাত্রা

বন্যা কবলিত এলাকায় নারীদের জীবনযাত্রা খুব কষ্টকর হয়ে ওঠে। দুর্যোগের সময় নারী নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। যেমনঃ খাদ্য পানির অভাব, স্বাস্থ্য ঝুঁকি, নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়া। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময় পুনর্বাসন ও মানসিক চাপ মোকাবিলা করা ও তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে। বন্যার কারণে নারীদের জীবনযাত্রা যে প্রভাব গুলো পড়ে তা নিচে দেওয়া হলঃ

  • স্বাস্থ্যঝুঁকিঃ বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। যা ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড সহ পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটায়। এছাড়া মশা উপদ্রব বাড়ে যা রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ায়।
  • খাদ্য পুষ্টির অভাবঃ বন্যা পরিস্থিতির খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
  • নিরাপত্তার অভাবঃ বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে নারীদের নিরাপত্তা একটু বড় উদ্বেগের বিষয়। অনেক সময় আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার নারীদের যৌন হয়রানি ও সহিংসতা শিকার হন।
  • পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরাঃ বন্যা পরবর্তী সময় নারীদের পুনর্বাসন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এ সময় তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এবং জীবিকা নির্বাহ করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

বন্যার আগে কী কী খাবার সংগ্রহ করবেন

বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে নিরাপদে থাকার পাশাপাশি খাদ্য সংরক্ষণ। একটি জরুরী বিষয় সবচেয়ে বেশি সংকর দেখা দিতে পারে খাবারও বিশুদ্ধ পানি। তাই আগে থেকেই এই দুর্যোগ মোকাবেলা প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। বন্যা চলাকালীন ও তার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রকমের সংকট দেখা দিতে পারে। খাদ্য সংকর তার মধ্যে অন্যতম। আমরা সচেতন হলে এ সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো সংরক্ষণ করবেন।

চাল ও ডালঃ বন্যা শুরু হয়ে গেলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা করা অনেক সময় কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই আগে থেকেই চাল সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন সাথে ডাল রাখলে দুর্যোগ এর দিনগুলোতে সংকটের হাত থেকে মুক্তি পাবেন।

চিড়া-মুড়ি-খইঃ শুকনো খাবারের মধ্যে চিড়া, মুড়ি, খই সহজলভ্যতা। এগুলো সহজেই সংরক্ষণ করতে পারবেন। এই শুকনো খাবার গুলো দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখতে সক্ষম। তাই বন্যার আগেই শুকনো খাবার হিসেবে চিড়া ,মুড়ি, খই সংরক্ষণ করুন।

গুড় বা চিনিঃ শুধু মুড়ি বা চিড়া খেতে ভালো না লাগতেও পারে তাই সংরক্ষণ করতে পারেন গুড়। গুড়ে শরবত খেলেও তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি সতেজ থাকা যায়। গুড়ের পাশাপাশি চিনিও রাখতে পারেন।

বন্যার সময় বিষধর সাপ মোকামাকড় থেকে সতর্ক

বন্যার সময়ে বিষাক্ত সাপ এবং পোকামাকড়ীর উপদ্রব বাড়ে। তাই এ সময় সতর্ক থাকা জরুরী। সাপ ও পোকামাকড় সাধারণত উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়। বাড়িতে উঁচু স্থানে সতর্ক থাকুন এবং সাপ যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। কিছু অনলাইনে উৎস থেকে জানা যায় কার্বলিক এসিড বা ফেনল ব্যবহার করে সাপকে দূরে রাখা যেতে পারে। এছাড়া দারুচিনির গুড়া, সাদা ভিনেগার, বা লেবুর রস স্প্রে করা অথবা পেঁয়াজ রসুনের পেস্ট দরজায় লাগিয়ে রাখলে সব দূরে থাকতে পারে।
বন্যা কবলিত এলাকায় সাপের উপযুক্ত থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারেঃ
  • উঁচু স্থান বা আশ্রয়স্থলের সাপ থাকতে পারে এ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
  • বাড়ির চারপাশে ফেনল বা কার্বলিক এসিডের ছড়িয়ে রাখতে পারেন।
  • রাতে আলোর ব্যবস্থার রাখুন যাতে সাপ আসতে ভয় পায়।
  • সাপ দেখলে অতিরিক্ত আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকুন। সাপকে বিরক্ত না করে দূরে থাকুন। প্রয়োজনের সাপটিকে সরিয়ে দিন বা কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিন।
  • সাপে কাটলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • মশা তাড়ানোর জন্য মশারি ব্যবহার করুন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন।

আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা

আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা মানে হল একটি নিরাপদ স্থান তৈরি করা। যেখানে মানুষ দুর্যোগ, যুদ্ধ বা অন্য কোন কারণে আশ্রয় নিতে পারে। একটি সাধারণত একটি অস্থায়ী বা দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা করতে পারে। যা মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমনঃ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি ব্যবস্থা করে দিতে পারে। বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য প্রথমে উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। যা বন্যার পানিতে সহজে প্লাবিত হবে না। এরপর আশ্রয় কেন্দ্রের নকশা এমনভাবে করতে হবে যেন তা দুর্যোগকালে পর্যাপ্ত স্থান বা সুবিধা দিতে পারে। বন্যার উপকারিতা এবং অপকারিতা অবশ্যই নিরাপদ এবং দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার মৌলিক দিকগুলো হলঃ
বন্যার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

১.ভূমিকম্প বন্যা ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি কারণে স্থান যুক্ত হওয়া মানুষের জন্যঃ এই ধরনের আশ্রয় কেন্দ্র সাধারণত দুর্যোগ প্রবল এলাকা তৈরি করা হয়। যেখানে মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হন সাময়িকভাবে থাকতে পারেন।

২.গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ঃ কিছু আশ্রয় কেন্দ্র গৃহহীন মানুষের জন্য তৈরি করা হয়। যেখানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

মন্তব্যঃ বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা 

বন্যার উপকারিতা ও অপকারিতা, উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝলাম যে বন্যার উপকারিতা ও রয়েছে এবং অপকারিতাও রয়েছে। বন্যার এই উভয় দিক বিবেচনা করে বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি বন্যা সঞ্চিত অবকাঠামো নির্মাণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্যার ক্ষতিকর প্রভাব কমানো যেতে পারে। বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা একদিকে যেমন মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে এমনি কিছু ক্ষেত্রে উপকারিতা ও বটে। এটি ভূমি ও পরিবেশের জন্য ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ।

আমাদের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন যে বন্যার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে এরকম আরো কনটেন্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ। 250510

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

protipsbangla নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url