পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। হঠাৎ যদি কারো দিনে তিনবার এর চেয়েও বেশি বার পাতলা পায়খানা হয় তাহলে ডায়রিয়া হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত,

সূচিপত্রঃ পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
- পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
- পাতলা পায়খানা হলে কি কি ফল খাওয়া যাবেনা
- ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
- পাতলা পায়খানা হলে ডিম খাওয়া যাবে কি
- পাতলা পায়খানায় চিড়ার উপকারিতা
- বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি
- পাতলা পায়খানা হলে কি খাবেন
- দ্রুত পাতলা পায়খানা বন্ধ করার উপায়
- পাতলা পায়খানা হলে মাছ খাওয়া যাবে কি
- মন্তব্যঃ পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা
পাতলা পায়খানা হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা, প্রতিদিন ছোট কিংবা বড় যে কোন বয়সের মানুষের পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার আক্রান্ত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে খোলা খাবার, কাঁচা খাবার খেয়ে খুব সহজে এই জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হচ্ছে। মানুষ শরীরে পানি এবং লবণের পরিমাণ কমে গেলে ডায়রিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। চিকিৎসকের মতে ডায়রিয়ার শুরুতে পানি এবং পানি জাতীয় খাবার খেলে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে অসাবধানতার কারণে কিছু কিছু সময় ডাইরিয়া এর মাত্রাটা অতিরিক্ত হয়ে যায় এবং ভুল খাবারের জন্য পাতলা পায়খানা হতে পারে যেমনঃ তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার,ৎফাস্টফুড, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত, মশলার সবজি এবং কিছু ফল ইত্যাদি এড়িয়ে চলাই উচিত। এছাড়াও অ্যালকোহল জাতীয় খাবার ও পানীয় বর্জন করা উচিত। পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার সময় কিছু খাবার খাওয়া উচিত নয় তার তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
আরো পড়ুনঃ আমাশয় রোগীদের খাবারের তালিকায় কি দিতে হবে বিস্তারিত জেনে নিন
- অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার
- তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার
- ফাস্টফুড
- অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
- ফল
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
- ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল
১.অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবারঃ অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খেলে পেটে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। মসলাযুক্ত খাবার খেলে খাবারের হজম হতে সময় লাগে এবং পেটে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
২.তৈলাক্ত ও ভাজা খাবারঃ তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার খেলে খাবার হজম করা কঠিন এবং ডায়রিয়ার সমস্যার বাড়িয়ে দিতে পারে যেমনঃ পরোটা, লুচি, তেলে ভাজা, সিঙ্গারা, সমচা, পিয়াজু ইত্যাদি।
৩.ফাস্টফুডঃ ফাস্টফুডে সাধারণত ফ্যাট, চিনি এবং লবণ বেশি থাকে যা ডায়রিয়ার সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪.অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারঃ চিনি যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমনঃ চকলেট, মিষ্টি, মিষ্টি জাতীয় খাবার ইত্যাদি।
৫.ফলঃ পাতলা পায়খানা হলে বড়ই পাকা তেঁতুল ইত্যাদি ফল খাওয়া উচিত নয়। এতে ডায়রিয়ার মাত্রটা অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে।
৬.দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারঃ অনেক মানুষের ক্ষেত্রে দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার হজম করা কঠিন হতে পারে এবং এর ফলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে। এজন্য তাদের ক্ষেত্রে দুধ এবং দুগ্ধজাত খাওয়া উচিত নয়।
৭.ক্যাফেইন ও অ্যালকোহলঃ পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিলে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল ডায়রিয়ার সমস্যা আরো খারাপ করে দিতে পারে এগুলো বর্জন করা উচিত।
পাতলা পায়খানা হলে কি কি ফল খাওয়া যাবেনা
পাতলা পায়খানার সময় কিছু কিছু ফল এড়িয়ে চলাটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। যেমনঃ বেশি আশঁযুক্ত ফল এবং কিছু রসালো ফল হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। যা পরবর্তীতে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া নামে পরিচিত হয়। এই ফল খাওয়ার ফলে পাতলা পায়খানা এবং ডাইরিয়া আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। পাতলা পায়খানার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করা এবং হালকা খাবার খাওয়া উচিত। যদি পাতলা বেশি হয় বা অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। পাতলা পায়খানার সময় যে ফলগুলো খাওয়া উচিত নয়।

অতিরিক্ত রসালো ফলঃ অতিরিক্ত রসালো ফল যেমনঃ তরমুজ, বাঙ্গি, আম ইত্যাদি। এগুলো শরীরের জলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে পাতলা পায়খানা আরো বেশি হওয়া সম্ভবনা থাকে।
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
- এন্টিবায়োটিকঃ যদি ডায়রিয়া ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক সেবন করতে পারেন।
- লোপেরামাইডঃ এটি অন্ত্রের চলাচল কমিয়ে ডায়রিয়া তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে।
- ল্যাক্টোবেসিলসঃ এটি একটি প্রবায়োটিক অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- প্রচুর পরিমাণ পানি পান করাঃ ডায়েরিয়ার কারণে শরীর থেকে পানি ও লবণে বেরিয়ে যাই তাই পানির ডাবের জল বা খাবার স্যালাইন পান করে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি।
- হালকা খাবার খাওয়াঃ ডায়রিয়া সময় সহজে হজম হয় না এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়। খেয়াল রাখতে হবে যে খাবারগুলো খেয়ে সহজে হজম হয় সেগুলো খাবার খাওয়া উচিত। যেমনঃ ভাত, কলা, আপেল ইত্যাদি।
- বিশ্রাম নেওয়াঃ ডায়রিয়ার সময় শরীরকে বিশ্রাম দেওয়াটা অনেক বেশি জরুরী।
পাতলা পায়খানা হলে ডিম খাওয়া যাবে কি
- ভাজা বা বেশি তেলে রান্না করার ডিম পরিহার করুন, কারণ অতিরিক্ত তেল হজমের সমস্যা করতে পারে।
- যদি ডিম খাওয়ার পর অসস্তি বা হজমে সমস্যা হয়, তাহলে ডিম খাওয়া বন্ধ করে দিন।
- ডায়রিয়া হলে শরীরের জলের অভাব দেখা দিতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে পান করা জরুরী।
- ডায়রিয়া হলে সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত।
- অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ হিসেবে চলা উচিত।
পাতলা পায়খানায় চিড়ার উপকারিতা
- চিড়া খাওয়ার সময় এটি যেন সামান্য নুন এবং চিনি দিয়ে সাধারণভাবে প্রস্তুত করা হয়। অতিরিক্ত মশলা বা তেল এড়িয়ে চলা উচিত।
- শুরুতে কম পরিমাণে চিড়া খাওয়া উচিত এবং দেখা উচিত যে পেটের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়।
- ডায়রিয়ার সময় প্রচুর পানি ও ইলেকট্রোলাইট হারায়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।
বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি
- পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ ডায়রিয়ার সময় শরীর থেকে অনেক পানি ইলেকট্রোলাইট হারিয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান, ডাবির পানি, ওর স্যালাইন এবং বিভিন্ন ধরনের ফলের রস পান করা উচিত।
- বিশ্রামঃ ডায়রিয়ার সময় শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন। শারীরিক বিশ্রাম নেওয়ার ডায়রিয়ার সময় আরোগ্য লাভের সাহায্য করে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াঃ যদি ডায়রিয়া গুরুতর হয় বা দুই তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পাতলা পায়খানা হলে কি খাবেন
- কলাঃ পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা ডায়রিয়ার সময় হারিয়ে যাওয়া ইলেকট্রোলাইটগুলি পূরণ করতে সাহায্য করে। এগুলো পেটে মৃত এবং অন্তরের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করার জন্য দ্রুত দ্রব্য নিয়োগ পাইবার সরবরাহ করে।
- সাদা চালঃ ব্র্যান্ড ডায়েটে একটি প্রধান উপাদান এটি হজম করার সহজ এবং শক্তি সরবরাহ করে।
- টোস্ট বা সাদা রুটিঃ সাধারণত সাদা রুটি পরিপ্রাপ্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত তরল শোষণ করতে এবং শক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
- সেদ্ধ আলুঃ আলগা মল শক্ত করতে সাহায্য করার জন্য আলু একটি দুর্দান্ত শক্তির উৎস। সেদ্ধ করা আলু তারাতারি হজম করার সহজ করে এবং এটি আরামদায়ক খাবারের বিকল্প প্রদান করে।
- চিকেন বা ভেজিটেবল সুপঃ পরিষ্কার সুপ আপনাকে ভালোভাবে হাইড্রেটেড রাখতে পারে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে।
দ্রুত পাতলা পায়খানা বন্ধ করার উপায়
- ডায়রিয়া প্রতিরোধ ঔষধ গ্রহণ করাঃ ডায়রিয়া প্রতিরোধ ঔষধ গ্রহণ সাধারণত ডায়রিয়া চিকিৎসার সর্বোত্তম এবং সর্বশেষ কার্যকর উপায়। আপনি এটি নিতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন ওষুধ খাওয়ার আগে।
- হাইড্রেটেড থাকুনঃ ডায়রিয়া ডিহাইড্রেশন হতে পারে। আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে জল, পরিষ্কার ঝোল বা ওরাল স্যালাইন পান করুন। এটি ডায়রিয়া মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া তরল ও প্রতিস্থাপন করতে সাহায্য করে।
- ইলেক্ট্রোলাইটঃ ডায়রিয়া প্রয়োজনীয় খনিজ গুলিকে হ্রাস করতে পারে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম পূরণ করতে ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানিও যেমনঃ স্পোর্টস ড্রিঙ্কস বা নারকেল জল পান করুন।
পাতলা পায়খানা হলে মাছ খাওয়া যাবে কি
- সহজেই হজমযোগ্য মাছঃ পাতলা পায়খানার সময় সহজে হজম হয় এমন মাছ যেমন রুই কাতলা বা তেলাপিয়া খাওয়া যেতে পারে তবে ভাজা বা অতিরিক্ত তেল মসলাযুক্ত মাছ খাওয়া উচিত নয়।
- চর্বি বিহীন মাছঃ চর্বিযুক্ত মাছ হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে তাই চরবিবির মাঝে বেছে নেওয়াটাই ভালো।
- সিদ্ধ বা গ্রিল করা মাছঃ সহজ লভ্য সিদ্ধ বা গ্রিল করা মাছ খাওয়া যেতে পারে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় মাছের প্রোটিনকে সহজতর করে তোলে।
protipsbangla নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url